নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৫ ডিসেম্বর ২০২০ | ৯:১৫ অপরাহ্ণ
ছবি: সংগৃহীত
চলমান অস্থিরতা ও জাতীয় সঙ্কট বিষয়ে আলেম-ওলামাদের করণীয় শীর্ষক বৈঠক রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় আজ শনিবার সকাল ৯ টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড- বেফাকের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে শীর্ষ আলেমদের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে শীর্ষ আলেমদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আল্লামা মাহমুদুল হাসান, আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী, মুফতী মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, আল্লামা শায়খ সাজিদুর রহমান, আল্লামা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী, মুফতী মনসুরুল হক, মুফতি মুবারকুল্লাহ, মুফতি রুহুল আমীন, মাওলানা আব্দুল হামিদ, মাওলানা শাব্বির আহমদ রশীদ, মুফতী রশিদুর রহমান ফারুক, আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম, মুফতী জাফর আহমদ, মুফতী আরশাদ রাহমানী, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল হাসান, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা আবু তাহের নদবী, মুফতি মুজিবুর রহমান, মাওলানা মনির হোসেন কাসেমী, মাওলানা নাজমুল হাসান, মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদবী, মাওলানা নুরুল হুদা ফয়েজী, মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ ফরিদী, মাওলানা ড. মুশতাক আহমদ, মুফতি ইয়াহয়া মাহমুদ, মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু, মুফতি গোলাম রহমান, মুফতী মুহাম্মদ আলী, মাওলানা একে এম আশরাফুল হক, মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ আজহারী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইউবী, মুফতি আবুল খায়ের বিক্রমপুরী প্রমুখ।
বৈঠকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিষয়ে গৃহীত ৫ প্রস্তাবনা
প্রস্তাবনা-১; মানবমূর্তি ও ভাস্কর্য যে কোনাে উদ্দেশ্যে তৈরি করা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কোনাে মহৎ ব্যক্তি ও নেতাকে মূর্তি বা ভাস্কর্য স্থাপন করে শ্রদ্ধা জানানাে শরিয়তসম্মত নয়। এতে মুসলিম মৃত ব্যক্তির আত্মার কষ্ট হয়। কারাে প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও তার স্মৃতিকে জাগ্রত রাখতে মূর্তি বা ভাস্কর্য। নির্মাণ না করে, শতকরা ৯২ ভাগ মানুষের বিশ্বাস ও চেতনার আলােকে কুরআন-সুন্নাহ সমর্থিত কোনাে উত্তম বিকল্প সন্ধান করাই যুক্তিযুক্ত।
প্রস্তাবনা-২: আমরা নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবমাননা, বিষােদগার, ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন ইত্যাদির তীব্র নিন্দা জানাই। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নাশের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি অবমাননাকর আচরণের ওপর কঠোর নজরদারি এবং দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে এসব অপকর্ম বন্ধ করা হােক।
প্রস্তাবনা-৩ : বিগত সময়ে দ্বীনি আন্দোলনে গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দান ও মামলা প্রত্যাহার করা হােক। এ সংক্রান্ত বিষয়ে সারাদেশের আলেম-ওলামা, ইমাম-খতিব ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ওপর সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করা হােক। ধােলাইপাড় চত্বরের পাশে ক্ষতিগ্রস্ত পুনঃনির্মিত মসজিদ নামাযের জন্য অবিলম্বে উন্মুক্ত করে দেয়া হােক।
প্রস্তাবনা-৪ : সম্প্রতি শব্দদূষণ ও জনদুর্ভোগের অজুহাতে দ্বীনি মাহফিলে লাউড স্পিকার ব্যবহারে প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টির তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। অথচ সাধারণ শব্দদূষণ, উচ্চস্বরে গান-বাজনা ইত্যাদি বিষয়ে কোনাে প্রশাসনিক উদ্যোগ নেই বললেই চলে। কেবল ওয়াজ-মাহফিল নিয়ে শব্দদূষণের অজুহাতে বিশেষ নির্দেশনা অনভিপ্রেত। অতএব, জনগণকে কল্যাণের পথে অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে সকল দ্বীনী মাহফিল যথানিয়মে অনুষ্ঠানের অবাধ সুযােগ প্রদান করা হােক।
প্রস্তাবনা-৫; যে সকল বিষয় শরিয়তে নিষিদ্ধ ও হারাম, সে সব বিষয়ে কুরআন-সুন্নাহর আলােকে সঠিক বক্তব্য তুলে ধরা আলেমদের দায়িত্ব। অথচ এক শ্রেণীর মানুষ আলেমদের বিরুদ্ধে বিষােদগার ও দায়িত্বহীন আচরণ করছে। কেউ কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনাশের উস্কানি দিচ্ছে। এসবের খোঁজখবর রাখা এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করা সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্ব। উস্কানিমূলক বক্তব্য, অবমাননাকর মন্তব্য, উগ্র স্লোগান, মিছিল-মিটিং সমাজে অস্থিরতা বৃদ্ধি করবে। ওলামায়ে কেরাম কঠোর ধৈর্য সংযম অবলম্বন করা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
সরকারকে এসবের উপযুক্ত প্রতিবিধান করতে হবে। অন্যথায় দেশব্যাপী উদ্ভূত বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতার দায় সরকার এড়িয়ে যেতে পারবে না। বিশেষ করে ইসলাম, দ্বীন ও বাংলাদেশ বিরােধী দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র ও অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ রােধ করা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।
বাংলাদেশ সময়: ৯:১৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২০
qaominews.com | a k m ashraf