নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ | ৮:০১ অপরাহ্ণ
ছবি: সংগৃহীত
কওমি আলেমদের বৃহত্তর অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমীর মৃত্যুর পর তার স্থলাভিষিক্ত কে হচ্ছেন, তা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে জল্পনা-কল্পনা। ইতোমধ্যেই মহাসচিব হিসেবে সংগঠনের নায়েবে আমির মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের নাম উচ্চারিত হচ্ছে। তবে, এই ৩ জনের মধ্যে মামুনুল হকের মহাসচিব পদে আসার সম্ভাবনা বেশিই বলে মনে করছেন অনেকে। তাকে হেফাজতের মহাসচিব করার দাবিও তুলছেন কেউ কেউ।
হেফাজতের একাধিক ঘনিষ্ঠসূত্রে জানা গেছে, মাওলানা মামুনুল হককে হেফাজতের পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে শেষ পর্যন্ত দেখা যেতে পারে। যদিও তার ওপরের পদে আরও কয়েকজন নেতা রয়েছেন। মহাসচিব পদে তার বিকল্প কাউকে ভাবছেন না বেশিরভাগ কওমি আলেম। নূর হোসাইন কাসেমীর পদে মামুনুল হকের পক্ষেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে তাদের নেতাকর্মীরা আওয়াজ তুলেছেন। তবে মামলা কিংবা অন্যকোনো কারণে মামুনুল হক রাজি না হলে সংগঠনের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদী ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীবের মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে মহাসচিব করা হতে পারে।
জানা গেছে, মাওলানা কাসেমীর মৃত্যুর পর আপাতত হেফাজতের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব দায়িত্ব পালন করবেন। কাসেমীর দাফন শেষ হলে সময়-সুযোগ মতো সংগঠনের নেতারা বসে নতুন মহাসচিব নির্বাচিত করবেন। তবে চমক হিসেবে মহাসচিব পদে আসতে পারেন আল্লামা আহমদ শফী অনুসারী নেতাদের কেউ। হেফাজতে ইসলামের নতুন মহাসচিব নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খেলেও সব প্রশ্নের সমাধান হচ্ছে আগামী সপ্তাহে। ওই সপ্তাহে হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নেতারা বসে নির্ধারণ করবেন নতুন মহাসচিব।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে নতুন করে আলোচনায় আসে হেফাজত। এর আগে, চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এরপর ১৫ নভেম্বর হাটহাজারি মাদ্রাসায় কাউন্সিল করে ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এরপর তৎকালীন মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীকে নতুন আমির নির্বাচিত করা হয়। আর নায়েবে আমির মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমীকে করা হয় মহাসচিব। কমিটিতে ৩২ জন নায়েবে আমির, ৪ জন যুগ্ম মহাসচিব, ১৮ জন সহকারী মহাসচিব নির্বাচিত করা হয়।
কমিটি গঠনের একমাস পূর্ণ হওয়ার আগেই বার্ধক্যজনিত ও করোনায় আক্রান্ত হয়ে রোববার (১৩ ডিসেম্বর)মারা যান হেফাজতের নতুন মহাসচিব আল্লামা কাসেমি। তার মৃত্যুতে মহাসচিব পদটি শূন্য হয়ে যায়। একমাস পূর্ণ হওয়ার আগেই নতুন মহাসচিব নির্বাচিত করতে হচ্ছে সংগঠনটিকে।
সর্বশেষ হেফাজতে ইসলামের একাধিক সূত্র জানায়, হেফাজতে ইসলামের সর্বশেষ কমিটিতে আল্লামা আহমদ শফীর অনুসারী হিসেবে বাদ পড়া নেতাদের ফের নেতৃত্বে আনা হচ্ছে। তাই হেফাজতে ইসলামের বর্তমান কমিটিকে ২০১ সদস্যবিশিষ্ট করা হচ্ছে। কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে আনা হচ্ছে আল্লামা আহমদ শফী অনুসারী কয়েকজন নেতাকে। এমনকি আল্লামা আহমদ শফীর অনুসারী নেতাদের মধ্য থেকে নতুন মহাসচিব করার ভাবনা ভাবছেন হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নেতাদের কেউ কেউ।
বাংলাদেশ সময়: ৮:০১ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২০
qaominews.com | a k m ashraf